সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১:১৮ পূর্বাহ্ন
বরগুনা প্রতিনিধি॥ বরগুনায় এক লাখ ২৫ হাজার টাকায় স্কুলছাত্রী ধর্ষণের ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় এক সাবেক চেয়ারম্যানর বিরুদ্ধে। বুধকার শালিশী বৈঠক শেষে ধর্ষকের বাবার কাছ থেকে টাকা নিয়ে অর্ধেক নিজের কাছে রেখে স্কুলছাত্রীর বাবাকে মামলা করতে না দেয়ারও অভিযোগ করেছে ভুক্তভোগির পরিবার।
বিষয়টি জানাজানি হলে স্কুল ছাত্রীর বাবা বরগুনা সদর উপজেলার ঢলুয়া ইউনিয়নের ইটবাড়ীয়া গ্রামের মজিদ সিকদারের ছেলে হৃদয় (২৭) হেউলিবুনিয়া গ্রামের সুলতান গাজীর ছেলে রাসেল ও (৩০) হৃদয়ের বন্ধু জলিল মাঝির ছেলে রাব্বির (২০) বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
জানা যায়, বরগুনা সদর উপজেলার নলী চরকগাছিয়া গ্রামের স্কুল ছাত্রীর বাবা বশির সিকদার ৩০ নভেম্বর বরগুনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা করতে এসে অভিযোগ করেন, তার নাবালিকা মেয়ে নবম শ্রেণিতে পড়াশোনা করে। ২৭ নভেম্বর সকাল অনুমান নয়টার সময় তাঁর মেয়ে প্রতিবেশী লিজার নিকট প্রাইভেট পড়ার জন্য রাস্তার উপর দাড়ায়। এমন সময় হৃদয়ের নেতৃত্বে অন্যান্যরা দুইটি মোটরসাইকেলে এসে স্কুল ছাত্রীকে অপহরণ করে গলায় চাকু ধরে খুনের ভয় দেখিয়ে অপহরণ করে তালতলী উপজেলার লাউপাড়া গ্রামে হৃদয়ের মামাতো বোন খাদিজার বাড়িতে নিয়ে যায়। স্কুল ছাত্রীকে খাদিজার বাড়ীতে রেখে একাধিকবার ধর্ষণ করে। পর দিন স্কুলছাত্রী হৃদয়ের ফোন দিয়ে তার ফুফু মাকসুদাকে বিষয়টি জানালে ২৮ নভেম্বর স্কুল ছাত্রীকে উদ্ধার করেন তিনি।
স্কুলছাত্রীর বাবা বশির খলিফা জানায়, আমি ৩০ নভেম্বর অপরাধীদের বিরুদ্ধে মামলা করতে উকিলের চেম্বারে যাই। বিচারক ছুটিতে থাকার কারণে মামলা লেখা সম্পন্ন করেও মামলা করতে পারিনি। বাড়ি যাবার পরে স্থানীয় সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আজিজুল হক আমাকে ডেকে শালিশের মাধ্যমে বিষয়টি সুরাহা করার আশ্বাস দেয়। তিনি বলেন, চেয়ারম্যান বলেছে আমাকে ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা অপরাধীরা দিবে এবং হৃদয়ের বিচার করবে। আমি রাজি না হলেও আমার মেয়ের নানা রাজি হয়েছে।
বুধবার এ বিষয়ে শালিশী বৈঠকে স্কুলছাত্রীর বাবাকে ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা বুঝিয়ে দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়। যদিও গত বৃহস্পতিবার চেয়ারম্যানের কাছে কিছু টাকা দিলেও তিনি ওই টাকা স্কুলছাত্রীর পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেন নি।
এ বিষয়ে সাবেক চেয়ারম্যান আজিজুল হক বলেন, হৃদয়ের অভিভাবক ও অন্যান্যরা আমার কাছে বৃহস্পতিবার অর্ধেক টাকা জমা দিয়েছে। বাকি টাকা জমা দিলে আমি মেয়ের বাবাকে দিয়ে দেব। আমি ওদের বিচারও করব।
এ বিষয়ে বরগুনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কেএম তারিকুল ইসলাম বলেন, এ ব্যাপারে আমার কোন তথ্য জানা নেই। মামলা হলে আমি আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারতাম। তবে এটি জঘন্য অপরাধ।
Leave a Reply